স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে এরই মধ্যে তিনটি ‘ডিমেরিট’ পয়েন্ট পেয়েছেন। টানা দুই বিপিএলে আম্পায়ারকে গালি দিয়ে বড় অঙ্কের জরিমানাও গুনেছেন। কদিন পরপরই বাংলাদেশ দলের এই তরুণ ব্যাটসম্যান সংবাদ শিরোনাম হচ্ছেন নেতিবাচক ঘটনায়। এবার তিনি শিরোনাম হলেন এক কিশোর দর্শককে পিটিয়ে!
২১ ডিসেম্বর রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ডে রাজশাহী-ঢাকা মহানগরের ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে লাঞ্চের ঘণ্টা খানেক পর ঘটেছে ঘটনাটি। তখন মহানগর প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করছে। সাব্বির খেলেছেন রাজশাহীর হয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ড্রেসিংরুম থেকে নেমে সাব্বির যাচ্ছিলেন মাঠের দিকে। এ সময় গ্যালারি থেকে তখন তাকে উদ্দেশ করে কেউ একজন ‘ম্যাঁও’ বলে চিৎকার করে। ওই সূত্রটির অনুমান, সাব্বিরের ধূসর চোখের কারণেই হয়তো মজা করে ওই শব্দটি বলেছে সেই কিশোর।
খেলা চলার সময় পরিচিত কাউকে দিয়ে ওই দর্শককে ধরে আনেন সাব্বির। মাঠের দুই আম্পায়ার গাজী সোহেল ও তানভীর আহমেদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে খেলা ফেলেই সাইটস্ক্রিনের পেছনে ১০-১২ বছর বয়সী ওই কিশোর দর্শককে মারধর করেন এই ব্যাটসম্যান।
বিকেল ৪টার সময় ম্যাচ রেফারি শওকাতুর রহমানকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানান রিজার্ভ আম্পায়ার শওকত আলী। পরের দিন সাব্বির ও দলের ম্যানেজারকে ডাকেন ম্যাচ রেফারি।
ম্যাচ রেফারির সামনে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাব্বির। যদি এটা নিয়ে বিসিবিকে কোনো প্রতিবেদন দেয়া হয় তবে অসুবিধা হবে বলে ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি এও নাকি বলেন, এ ঘটনার বিচারের ভার মোটেও ম্যাচ রেফারির নয়!
ম্যাচ চলার সময়ই ২২ ডিসেম্বর সাব্বিরের বিরুদ্ধে গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন ম্যাচ রেফারি শওকাতুর রহমান। কোনো খেলোয়াড় মাঠে কাউকে লাঞ্ছিত করলে শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও ঘরোয়া লিগে কয়েকটি ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ার নিয়ম রয়েছে।
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, ‘আমি এরই মধ্যে প্রতিবেদনটা শৃঙ্খলা কমিটিকে দিয়ে দিয়েছি। তারা বাকি সিদ্ধান্ত নেবে।’
যদিও ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান শেখ সোহেল জানালেন এখনো প্রতিবেদনটা পাননি, ‘মৌখিকভাবে শুনেছি ব্যাপারটা। যতটুকু শুনেছি তাতে মনে হচ্ছে বড় শাস্তিই সে পাবে। মাঠে সে মোবাইলও ব্যবহার করেছে শুনেছি। ম্যাচ চলার সময় মাঠে মোবাইল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ। প্রতিবেদন পাওয়া মাত্র তাকে ডাকব, তার কথা শুনব। আবার প্রতিবেদন দেখে যদি মনে হয় ওকে ডাকার প্রয়োজন নেই, তাহলে আমরা দ্রুত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’